জাপানি বংশোদ্ভূত দুই শিশুর জিম্মা চেয়ে করা মামলা খারিজ করে পারিবারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ইমরান শরীফের (বাবা) করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার জেলা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে দুই সন্তান কার সঙ্গে থাকবে সেই বিষয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার জন্য উদ্যোগ নেবেন আদালত। তাই দু’পক্ষের সমঝোতার জন্য একটি তারিখ ধার্য করা হবে বলেও আদেশে বলা হয়েছে। এর আগে, গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশুদের জিম্মা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে রায় দেন।

সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরদিন ইমরান শরিফ এ আপিল করেন। আদালত আপিলের গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য রেখেছিলেন। দুই সন্তানের মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দু’মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।

মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনা মহামারির মধ্যে গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দু’সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন। তবে সেই রায় বাবা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।

এরপর গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি দু’মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তার নিষ্পত্তি হবে পারিবারিক আদালতে এবং তার আগ পর্যন্ত দু’শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ। তাই আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে আসে।